তারার দেশে সুকুমারের সন্ধানে হারাল জোনাকি

 অন্ধকারে বাতি

মেঠো বাকা পথে ছোট্ট গ্রামে 

                               জোনাকিদের বসবাস      

গোলপাতা আর মাটির দেয়ালে মিশে আছে অক্লান্ত সুবাস

উঠানের কৃষ্ণচূড়া টি রং পৌছে দেয় বসন্তে

        কোকিলের মায়া জড়িয়ে সে উড়ে চলে বাতাসে

অকুল পাথারে শিশির কোটর 

                          আধপাকা ধানের অস্ফুট সুবাস

নুপুর পায়ের ঝনাৎ ঝনাৎ পাওয়া যায় 

                                   জোনাকিদের শব্দের ঘ্রাণ

জোনাকির বাবা বিরাট কৃষক

                               সারা দেশে বেজায় নাম ডাক     

সন্তানের মতো লালন করছে 

                    পালন করছে ধানের উর্বর জমিটার

দুই বিঘা জমি সোনার ফসল

                  অবাঞ্ছিত গবাদি পশু আর মৎস্যের চাষ

পরিশ্রমের ফসল ফোটায় মুখে হাসি 

                        নবান্ন আর ফাল্গুনেতে নবজন্ম তার

নবসজ্জায়সজিত হয়ে অন্ধকারকে সাজিয়ে তোলে জোনাকিদের আলোয়


পাড়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ পাঠক , বুদ্ধিতে বাজিমাত

              সকলের ছিল আদর্শ স্বভাব চরিত্রে ভার

নিদারুন চরিত্রের অকপট চরিত্র ছিলো সুকুমার

              যখন যাকে দেখিত,করিত,বলিত জ্ঞানের আলাপ, সকল গ্রামে সুনাম ছড়িয়ে সুবাস পরোপার,

নিল সুকুমার মনে স্থান করে গুরুজনদের মনে ভার

সকল যুবক ,যুবতীরা আরম্ভ করিল হিংসা

 

                   শতচেষ্টা সত্ত্বেও করিতে ব্যর্থ হাসিল সুকুমারের স্থানটা

কথোপকথন কালে গুরুত্ব হীন হইল সুকুমার


যাহাকে দেখিয়া জ্ঞান প্রদান কালে ই মুখ ভার হতো ঘুরিয়ে নিত মুখ বারংবার


মূর্খ জোনাকি বুঝিতে না জানিত না অতভাব

                ছিল না কোনো তৃষ্ণা তার হিংসা আর অহংকারের দান,মূর্খ হলেও অতৃপ্ত ছিল সন্ধানে যে কোনো জ্ঞানের আহরণ

 

অসমাপ্ত প্রশ্নে তুলিত সে ঝড় সংকল্পের

              প্রসন্ন হয়ে সুকুমার দিল তার ই দিকে

 মনোযোগ,পাঁচ কথা চলিত গ্রামের লোকের মুখে

কে তুলিবে তা দিন তো গিয়াছে 

         পুরাতন ভাবনা হলেও দিনটা নতুন যুগের 

দিন যতো যায় হাসি ঠাট্টার পাত্র তারা 

                গ্রামের অভিভাবকদের মাথায় আগুন নারী কেন এত শিখিবে তা নিয়া

                উন্নত বিশ্বের অংশীদার কেন নারী হবে

পুরুষের শাসন বারণ তবে তো তুচ্ছ হবে

                 মূল্য দিতে শুরু করিল ঠিক আরো বশি এ কথার ই পরে,

জোনাকির মূল্য সুকুমার করিত চিন্তা, ভাবনা আর মূল্যবোধের পরিমাপকাঠি দিয়ে 

                              শোনো নি কোনো শাসন বারণ 

করেছে তুচ্ছ পাছে লোকের কথায়

                  চিন্তার সাথে চিন্তার যখন মিলিত গুরুত্ব, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে হয়ে গেলি মনের সাথে মনের মিলন


বুঝিতে খুবই দুজন দুজনকে ,করিত জ্ঞানেরই চর্চা

                ভালোবাসা আর জ্ঞানের পথে বাধনহার ছিল মনটা,হঠাৎ রাতে চিঠির আওয়াজ সুকুমারের কাছে 

ঢাকায় একটা চাকরি হয়েছে কালকেই যেতে হবে 

            কাউকে কিছু না জানিয়ে রওনা দিল সে রাতে

চিঠি লিখে যেতেও পারে নি জোনাকির ও কাছে

           হয়তো কিছু বলতে চেয়েছিল অস্ফুট স্বরে 

সেদিনের দেখাতে ছলছল নয়ন আজও খুবই মনে পড়ে

              যাচ্ছে আবার বাড়ি সুকুমার প্রায় ছয় মাস পরে ,আনন্দে তার রক্ত যেন গরম হয়ে আসে

                    ট্রেন থেকে নেমে হতভম্ব সুকুমার

দেখে অজস্র মানুষের দাম্ভিক কোলাহল

                     ভিড় এড়াতে সামনে যেতেই ভাসে মড়া গাঙের দাগ,


কবেরের পাশে শুধু লেখাটি পড়ে আছে 

                     ‌ ‌. নেই মানুষটি যে আর 

   

"তারার দেশে সুকুমারের সন্ধানে হারাল জোনাকি"


জয়া আচার্য্য

বিবিএ প্রথম বর্ষ

বিভাগ: ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

Blogger দ্বারা পরিচালিত.