ছেলেটা কবি ছিলো বাংলা কবিতা

 ছেলেটা আমৃত্যু কবি হতে চেয়ে ছিলো,

কবিতার পঙক্তিকে রেশমি রুমালে মোড়া প্রেমিকা ভেবে ছিলো।

এই জগৎ সংসারের এত হাহাকারের ভিড়েও ছেলেটা

শ্বেত পদ্ম আর জলকেলির প্রাণবন্ত প্রেমময় কাব্য লিখে ছিলো।

ভোরের নরম রোদ্দুরে শুভ্র পায়রার পালকে সোনালী রঙের 

মসৃণ প্রেমের কবিতা লিখে ছিলো খুব আহ্লাদ মাখা হৃদয়ে।


ছেলেটা এই বিশ্ব সংসারের সব গ্লানি বুকে ধারণ করেও কবি হতে চেয়ে ছিলো।

একমুঠো সাদা ভাতের স্বপ্নে বিভোর হয়ে তাকিয়ে থাকতো রাস্তার পাশে সস্তা হোটেলে,

কত কত খাবার রোজ পচে নষ্ট হয়ে আশ্রয় পায় ময়লার ডাস্টবিনে!

ছেলেটা বাস্তবতা নিয়ে কবিতা লিখতো পত্রিকার পাতাতে,

ধনী গরীবের ভেদাভেদ তুলে ধরে ছিলো কবিতার ভাষাতে।


ছেলেটা এই বর্ণবৈষম্যের পৃথিবীতে একজন কবি হতে চেয়ে ছিলো,

শ্যামবর্ণ ও কালোবর্ণ নিয়ে বেশ লেখতো কবিতার লাইনে।

ছেলেটা মানুষ মাপতো বিবেকের কাঠগড়াতে,

কবিতা লিখতো অনিয়ম আর দুর্নীতি নয়তো ঘুষের বিপরীতে।

ছেলেটা রাজনীতি নিয়েও কবিতা লেখতো দৃঢ় হাতে।


ছেলেটা এই স্বার্থপর দুনিয়াতে নিঃস্বার্থ একজন কবি হতে চেয়ে ছিলো।

কবিতার ভাঁজে ভাঁজে লিখেছিলো সম্পর্কের নানা টানাপোড়েনের গল্প,

আধুনিক সমাজে রক্তের সম্পর্ক গুলো এখন যেনো হয়ে যাচ্ছে মূল্যহীন দায়ভার মুক্ত!

একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা গুলোও যেনো হয়ে যাচ্ছে নিষ্প্রাণ,

ছেলেটা অসংখ্য কবিতাতে লিখে ছিলো গুরুজনদের প্রতি যেনো অনড় থাকে সম্মান।


ছেলেটা এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে নিজেকে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চেয়ে ছিলো,

কবি মানেই ঝোলা কাঁধের মলিন পাঞ্জাবি পড়া কোন মানুষ নয়,

নিজেকে ভেঙ্গে চুরে একজন কাব্যপ্রেমী করার আপ্রাণ চেষ্টা করে ছিলো।

সেইদিন ভোর বেলা পত্রিকার পাতাতে একটা লাশের খবর ছিলো!

দুর্বিত্তের হাতে খুন হওয়া মানুষটাই ছিলো সেই কবি ছেলেটা।

যাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছিলো,

ছেলেটা বাস্তবতা নিয়ে কবিতা লিখতো এটাই হয়তো হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো!

অথচ ছেলেটা আমৃত্যু কবি হতে চেয়ে ছিলো।


----- ছেলেটা কবি ছিলো


       ---------------ইসমাত জাহান সিলভী আয়াত


Blogger দ্বারা পরিচালিত.