গল্পের নামঃ,,,,ঘড়ি,,,
লেখক মোঃরাসেল বিন আবু তালেব
সাফাত খুবই শান্তশিষ্ঠ ছেলে।হঠাৎ একদিন তার বাবা তাকে একটি ঘড়ি কিনে দেয়।ঘড়িটির দাম পাঁচ শত টাকা ছিল।সাফাতের মা দুই বছর আগে রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়।সাফাত এখন ক্লাস সেভেনে পড়ে।তো একদিন সাফাত ইস্কুলে যাইতেছে। এমন সময় রাস্তার ভিতর এক বৃদ্ধা লোকের সঙ্গে দেখা হয়।বৃদ্ধা লোকটি দেখতে পাগলের মতো ছিলো।তো বৃদ্ধা লোকটি সাফাত কে কাছে ডেকে নিলো এবং নাম জানতে চাইলো।তখন সাফাত তার নাম বলে দিলো।বৃদ্ধ লোকটি সাফাত কে বললো দেখো তো ঘড়িতে কয়টা বাজে? সাফাত ঘড়ি দেখে বললো এখন বারোটা বাজে।বৃদ্ধা লোকটি সাফাত কে বললো তোমার বাড়ি কোথায়? সাফাত বললো আমার বাড়ি সাঘাটা থানার সামনে।বৃদ্ধা লোকটি বললো আমাকে একটু সাহায্য করতো বাবা।সাফাত বললো কি সাহায্য করতে হবে আপনাকে? বৃদ্ধা বললো আমাকে আজ তোমার বাসায় থাকতে দিতে হবে।আমি গাইবান্ধা থেকে এসেছি। অনেক দূরের পথ ছিলো বাবা।সাফাত বললো আচ্ছা ঠিক আছে।একথা বলে সাফাত বৃদ্ধা লোকটিকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে।সে দিন আর সাফাতের ইস্কুলে যাওয়া হলো না।সাফাতের বাবা সেদিন বাড়িতে ছিলো না।বেলা গড়িয়ে এখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সাফাতের বাবা সাফাতকে ফোনে জানিয়ে দিল যে, সে আর আজ বাড়িতে ফিরবে না।সাফাত বললো আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।একথা বলে সাফাত ফোন রেখে দিল।এরপর বৃদ্ধা লোক এবং সাফাত দুইজন মিলে রাতের খাবার শেষ করলো।এরপর হঠাৎ বৃদ্ধা লোকটি সাফাত কে বললো যে, তোমার হাতের ঘড়িটা আমাকে একটু পড়তে দিবা। তখন সাফাত হাত থেকে ঘড়িটা খুলে বৃদ্ধার হাতে পড়িয়ে দিলো।হাতে ঘড়ি পরার পর বৃদ্ধার চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগলো।তখন সাফাত বললো আপনি কাদছেন কেনো? বৃদ্ধা লোকটি বলল, তোমার মতো আমার একটা ছেলে ছিল।আমার ছেলেটির নাম ছিলো আরাফাত।একদিন আরাফাত আমার কাছ থেকে একটা ঘড়ি কিনে চাইলো।কিন্তুু আমার কাছে তখন কোনো টাকা ছিলো না।আমি তো একটা রিক্সা চালাইতাম।মাঝে মধ্যে কপাল ভালো হলে খেপ পাইতাম।আর তা না হলে বসেই থাকতাম।যে দিন খেপ হইতো না, সেই দিন কাছে টাকা থাকতো না।আরাফাত যে দিন ঘড়ি কিনে চাইলো, সেই দিন কোনো খেপ মারতে পারি নাই।তাই তখন হাতে টাকা ছিলো না।আমি যখন বাড়ি ফিরলাম তখন আরাফাত আমার কাছ থেকে টাকা চাইলো ঘড়ি কেনার জন্য । কিন্তুু আমার কাছে টাকা না থাকায় তাকে আর টাকা দিতে পারলাম না।আমি বললাম টাকা নাই, তাই তোকে এখন ঘড়ি কিনে দিতে পারবো না।এই কথা শুনে আরাফাত বাড়ি থেকে বেড় হয়ে গেল।আমাদের বাড়ির পাশেই রেললাইন ছিল। আরাফাত আমার ওপর রাগ করে টেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্না হত্যা করে।আমি আমার ছেলেটাকে টাকার অভাবে ঘড়ি কিনে দিতে পারি নাই।এসব কথা সাফাত শুনতে শুনতে তার চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ে।