গল্পের নামঃ,,,,তুমি এসেছিলে মোর জীবনে,,,
লেখক মোঃরাসেল বিন আবু তালেব
সেদিন ছিল এইচ এস সি পরীক্ষার চতুর্থ দিন।। বায়োলজি ১ম পত্র পরীক্ষা সবে শেষ হলো।।।এরপর বাসায় চলে আসলাম।।।বিকেলে ছোট মারার ফোন এলো।। মামার বাসায় যেতে বললো।।। তাদের বাসায় নাকি মিলাতের ব্যবস্তা করা হয়েছে নানু ভাইয়ের সুস্থতার জন্য।। বাসায় কিছু কাজ শেষে চলে গেলাম মামা বাড়ি।।।বাসায় কলিং বেল দিলাম।।একটুপর দরজা খুলে দিল।।দরজা খুলে দিল একটা অচেনা মেয়ে।আমি হকচকিয়ে গেলাম।।মেয়েটি আমাকে দেখে সালাম দিল।।আমি সালামের উত্তর দিলাম।।এরপর ভিতরে প্রবেশ করলাম।।মেয়েটি কে প্রথম দেখায় আমার ভালো লেগে যায়।।এরপর যথারিতি খাওয়া দাওয়ার পালা শেষ।এরপর আমি মামির কাছ থেকে জানতে পারলাম মেয়েটি পাশের বাসায় থাকে তার বাবা মার সাথে। তারাও দাওয়াত খেতে এসেছে।।তো আমি খাওয়া শেষে বসে আছি পাশের ঘরে সোফায়।।। মেয়েটি সেখানে কোথ থেকে হঠাৎ চলে আসলো।।।আমাকে বললো কি করেন? তো আমি একটু হকচকিয়ে গেলাম।।।আমি বললাম যে, এইতো কিছু না বসে আছি।।।এরপর কিছু ক্ষন কথা হলো।।আমি কিছু বোঝার আগেই মেয়ে টি আমার কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়ে বসে।।এটা শুনে আমি একটু অবাক হলাম যে কেন হঠাৎ ফোন নাম্বার চাইলো? তো যাই হোক ফোন নাম্বার নেওয়ার পর আমাকে তার নাম্বার দেওয়ার জন্য ফোন দিল এবং আমি নাম্বার টা সেভ করে নিলাম।।এরপর আমি মামার বাসা থেকে চলে আসলাম।।আমার পরীক্ষা যথাসময়ে শেষ হয়ে গেল।।এর কিছু দিন পর আমি ওই মেয়েটির নাম্বারে ফোন দেই।।প্রথমে চিনতে পারে নাই,,তবে পরে পরিচয় দেওয়ার পর চিনতে পারে।।ও একটা কথা বলতে ভুলে গেছি,,সেই মেয়েটির নাম সুমি।।তো এভাবে প্রতিদিন আমাদের ফোনে কথা হয়।।তো একদিন আমি মেয়েটিকে প্রপোজ করে বসি।।মেয়েটি রাজি হয় নি সেদিন।।তবে তার পরের দিন আমাকে ফোনে ম্যাসেজ করে এবং বলে যে, আমিও তোমাকে ভালোবাসি।।এভাবে চলতে থাকে আমাদের মধুর সম্পর্ক।। একদিন আমরা রিক্সায় ঘুরতে বের হই।।হঠাৎ পেছন থেকে একটি মাইক্রোবাস আমাদের রিক্সাকে ধাক্কা দেয়।।ধাক্কায় আমি এবং সুমি দুজনে ছিটকে পরে যাই।।আমি তেমন ব্যথা পাইনি,, তবে সুমি মারাত্মক ভাবে আহত হয়।। আমি সুমিকে তারাতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং সুমির বাবা মাকে খবর পাঠিয়ে দেই।।তারা সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই হাসপাতালে চলে আসে।।সুমির পা বাজে ভাবে ভেঙ্গে গিয়েছে এবং তার পায়ের অপেরাশন করতে হবে।।এর জন্য ওনেগেটিভ রক্ত লাগবে।।রক্ত ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হলো এবং যথাসময়ে রক্ত সুমির শরীরে দেওয়া হলো।।অবশেষে অপেরাশন শেষ হয়।।।এভাবে ২মাস সুমি বিছানায় থাকে এবং পা ভালো হয়ে যায়।।।আমি প্রতিদিন তার খোজ খবর নিতাম ফোনে।।।অবশেষে সুমি সুস্থ হয়ে ওঠে।।। আমরা আবার আগের মতই ফোনে কথা বলতাম এবং দেখা করতাম।।এভাবে কেটে গেল দুইটা মাস।।এরপর একদিন হঠাৎ সুমি অসুস্থ হয়ে পরে এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।।ডাক্তার সব ধরনের পরীক্ষা করলো এবং পরীক্ষার ফলাফল দেখে ডাক্তারের ভুরু কুচকে গেল।।।সুমির বাবা জানতে চাইলো কি হয়েছে? তখন ডাক্তার বললো যে আপনার মেয়ে এইচ আই ভি পজেটিভ।।শুনে সুমির বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।।এ দিকে সুমি আমাকে ফোন করে সব খুলে বললো।।আমি শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পরলাম।।তবে সুমিকে যখন রক্ত দেওয়া হয়েছিল পায়ে অস্ত্রপচারের সময়।।তখন ভালো ভাবে রক্ত পরীক্ষা না করেই তরিঘরি করে সুমির দেহে রক্ত দেওয়া হয়।।আর সেই রক্তে এইচআইভির জীবাণু ছিলো।।সেটা ডাক্তারেরা ভালো ভাবে পরীক্ষা না করেই রক্ত দেওয়া হয়।।আর তখনই এইচ আই ভি পজেটিভ হয়ে যায় সুমির দেহ।।ডাক্তার এসব কিছু সুমির চাচা কে বলে দেয় এবং এই কথা গুলো সুমি আরাল থেকে শুনতে পায়।।এবং মনে মনে সুমি খুব কষ্ট পায়।।এ কথা গুলো সুমি তার ডায়েরি তে লিখে রাখে।।।এদিকে সুমি আমাকে বারে বারে ফোন দিতো। কিন্তুু আমি ফোন রিসিভ করতাম না।।কারন আমি ভাবতাম এইচ আই ভি পজেটিভ মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখবো কি ভাবে?তাকে বিয়ে করবো কি ভাবে? বিয়ে করলে তো আমিও এইচ আই ভি পজেটিভ হতে পারি।।তাই আমি সুমির সাথে সম্পর্ক টা আর রাখতে চাইতেছি না।।এভাবে কেটে গেলো দুই মাস।।হঠাৎ একটা ফোন এলো।।ফোনটা ছিল সুমির চাচার।।।চাচা আমাকে বললো যে সুমি মারা গেছে।।আমি সুমির বাসায় চলে গেলাম।।এবং বাসার নিচে দেখতে পেলাম সুমির নিথর দেহখানি পরে আছে খাটের ওপর।।সুমির নিথর দেহ খানি পরে আছে এবং তার দিকে আমি চেয়ে আছি।।।মনটা চাইছে সুমির হাত টা ধরে একবার হাটি।।।