ধর্ম ও কবি
যুবক অনার্য
ধর্ম
যে- ঈশ্বরের বর্ণনা করে তা সর্বস্বীকৃত নয়
দোষটা কার- ধর্মের নাকি ঈশ্বরের
নাকি দোষটা মানুষের!
ধর্ম ঈশ্বরের সন্ধান দিয়েছে নাকি ঈশ্বর ধর্মের সন্ধান দিয়েছে
মানুষেরা ধর্ম আর ঈশ্বরের সন্ধান পেলো কীভাবে
অলৌকিক এক মাহামানবের কাছে!
তাহলে ধর্ম ঈশ্বর মহামানব- এরা আজ প্রশ্নবিদ্ধ কেনো
সমস্যাটা কোথায়
সমস্যা কি মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা!
এসব অনেক জটিল প্রশ্ন
এরকম প্রশ্ন করলে সেই হাজার বছর
আগে থেকেই যা হয়
প্রশ্নকারীকে মেরে ফেলা হয় বিনা নোটিশে
বস্তুত পৃথিবীতে ধার্মিক মানুষের সংখ্যাই বেশি
এর কারণ কি
এর প্রধাতম কারণ দুটি: নরকের ভয়
এবং ধর্ম ভাঙিয়ে আধিপত্য বিস্তার করা
নরকের ভয় না থাকলে কেউই ধর্মকর্ম পালন করতো না
আর ধর্মকে আজ থেকে নয়
ভাঙিয়ে খাওয়া হচ্ছে যুগের পর যুগ
এসব নিয়ে যে প্রতিবাদ হয়নি হচ্ছে না তা কিন্তু নয়
প্রতিবাদ হতো হচ্ছে হবে
প্রতিবাদে মানুষ খুন হতো হচ্ছে হবে
তো ধর্ম ঈশ্বর মহামানব বিষয়গুলো
এভাবেই চলে আসছে চলতেও থাকবে
মাঝখানে কিছু মানুষ দোদুল্যমান হয়ে
উত্তর খুঁজে যাবে কিন্তু উত্তর পাবার কোনো সম্ভাবনা নেই
তাহলে এরা কী করবে!
এরা উত্তর খুঁজেই চলবে
আমার উপস্থাপিত বিষয়টি যেহেতু জটিল ঝুকিপূর্ণ ও অমীমাংসিত এবং বিষয়টি
মীমাংসিত করবারও আমি কেউ নেই
আমি একজন অতি অতি অতিব সাধারণ মানুষ যাকে বলে আম পাবলিক
তাহলে আমি কোন দিকে যাবো
প্রশ্ন দাঁড়াবেই
জনগণ তো আর ছেড়ে কথা কইবে না
প্রশ্ন:এই যে কবি মহাশয় এত যে চেল্লাচ্ছেন পারবেন একটা কিছুরও সমাধান দিতে!
উত্তর:নিশ্চই পারবো না
প্রশ্ন :তবে যে চেল্লাচ্ছেন ভারী।চাপাতির ভয় বুঝি আপনার নেই? বার্ট্রান্ড রাসেল হতে চান
হতে চান আহমেদ শরিফ!
অই যুগ শেষ
এখন উল্টাপাল্টা বোলবেন তো মরবেন
উত্তর: উত্তরহীন
কিছুক্ষণ মৌনতা
তারপর প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে সামান্য ভাবতে থাকা
এদিকে জনতার হইহট্টগোল-মুর্তাদ সালাকে এখনই খতম করে ফেল
আমি জানি এসবের মীমাংসিত কোনো উত্তর নেই
তবু একটা কিছু বলে তো রেহাই পেতে হবে
আমি বোল্লাম : আমাকে হত্যা করলেই কি সব প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন!
আর সকলেই স্বর্গে চলে যাবেন কিংবা
আমাকে বাঁচিয়ে রাখলেই কি সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এবং আমার মত এমন রকমের প্রশ্নকারীকে বাঁচিয়ে রাখবার দায়ে মানে হত্যা
না করবার দায়ে সকলেই নরকে চলে যাবেন!
এইবার জনগণ একটু নড়েচড়ে বসলো
নিজেদের মধ্যে গুণগুণ আউয়াজে
কিছু বলতে লাগলো
একজন খুব উত্তেজিত হয়ে বোলেই ফেল্লো: একদম জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবো।
আমি মনে মনে বলি -জাহান্নাম আছে কিনা
সেই সিদ্ধান্তেই তো পৌঁছানো গেলো না
তাহলে নাই রকমের একটি জায়গায়
পাঠাবে কি করে
কিন্তু এসব তো আর বলা যায় না
বোল্লে খেলা এখানেই শেষ
আমি বোল্লাম : সিদ্ধান্ত আপনারা নিন
আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি আপনাদের ধর্মের
এমন অনেক কিছুই আছে যা আমার কাছে পরিষ্কার নয়
আমি মেনে নিতে পারি নি
ব্যস শুরু হলো তুমুল হইচই
দলপতি ঘোষনা দিলেন -
একে জায়গা মতো নিয়ে যাও
দু'জন লোক আমাকে বদ্ধভূমিতে নিয়ে এলো
আমার হাত আর চোখ বাঁধা
আমি লোক দু'টিকে বোল্লাম:
আপনারা খুব সৌভাগ্যবান আমাকে খুন করলেই গাজী হয়ে যাবেন।
লোক দুটি কোনো কথা বোল্লো না
আমাকে চুপ হতেও বোল্লো না।
আমি আবার বোল্লাম: একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে- এই যে আপনারা আমাকে
খুন করতে চলেছেন শুধ দুই একটা
প্রশ্ন করেছি বোলে -এটা কি আপনাদের ঈশ্বরের সরাসরি নির্দেশ!
ওরা বোল্লো- আমাদের ধর্ম গ্রন্থে এরকমই
বলা আছে। ঈশ্বর কখনও সরাসরি দেখা দেন না।
ওরা এইবার আমাকে দুই হাত উপরে
তুলতে বোল্লো। সম্ভবত একটু পরেই
ট্রিগারে প্রেস করবে।তার আগেই আমি
বোলতে চেয়েছিলাম:
আপনাদেরকে ঈশ্বর বানিয়েছেন দুই চোখ দিয়ে কিন্তু ধর্ম এবং আপনারা ঈশ্বরের চেহারায় বসিয়ে দিয়েছেন একটিমাত্র চোখ
আমাকে আর সুযোগ দেয়া হলো না।
একটু পরেই প্রচন্ড শব্দে কেঁপে উঠবে চরাচর
দর্শকদের কেউ বোলবেন: ধ্যাৎ
কবিরা এতো বোকা হয় জানতাম না
একটু আপোষ করলেই তো বেঁচে যেতো
কেউ আবার বোলবেন:বাপকা বেটা মরবে তবুও আপোষ করবে না-একেই তো বলে কবি!
আমার হয়তো ততক্ষণে ঈশ্বর নামক কারো সংগে দেখা হয়ে যাবে কিংবা হবে না অথবা এমনও হতে পারে ঈশ্বর তিনিই যিনি আমাদেরকে দেখেন
কিন্তু তাকে দেখবার কোনো অধিকার
আমাদের নেই