অমানুষ
সাইফুল ইসলাম
মা, স্বাধীনতা কি?
স্কুলে যাওয়ার পথে পাড়ার মোড়ে ঐ বুড়োর গাল টেনে দেয়াই কি স্বাধীনতা?
মোটরবাইকে চড়ে জামার উড়না টেনে ধরাই কি স্বাধিকার?
বখাটে ছেলের কথায় সায় না দেয়ায় এসিডদগ্ধ হওয়াই নিয়তি?
কলেজ হতে ফেরার পথে টেনে ধরা আমার আঁচলটা কি তাদের একান্তই ব্যক্তিগত সম্পত্তি ?
চা দোকানের আলোচকদের চোখে এতো হিংস্রতা কেন, মা?
কোচিং থেকে ফেরার পথে পাড়ার মোড়ে কেন ভাইয়া, বাবার হাতটা শক্ত করে ধরতে হয়?
রাস্তার মোড়ে ঐ নিকোটিনের মেলায় কেন কুৎসিত সব শব্দ ভেসে বেড়ায়?
চোখের দৃষ্টি কেন এতো লালসাকামনা যুক্ত হয়?
পাবলিক বাসে কেন হিংস্র হাতগুলো স্পর্শকাতর স্থানে বারবার স্পর্শ করে?
তাদের কেন পুরুষ বলে পুরুষজাতির অপমান করা হয়?
তাদের কেন মানুষ বলে মানুষের অপমান করা হয়?
তাদের কেন প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয় না?
তাদের দেহ কেন এসিডদগ্ধ করে ঝলসে দেয়া হয় না?
তাদের থেকে কেন তাদের স্বাধীনতা স্বাধিকার কেড়ে নেয়া হয় না?
কি করে ঘুরে বেড়ায় তারা এই মুক্ত ধরনীতে স্বাভাবিকভাবে ?
সম্মান হারিয়ে আমি কেন বোরখা পড়ে পথচলবো?
লোকচক্ষুতে ও আলোচকদের আলোচনার বিষয়বস্তু হবো?
সম্মানহানি করা পশুতুল্য অমানুষ গুলো কেন সম্মানিত?
পশুত্ব ধারণ করে বিলাসিতা কি স্বাধিকারের অভিচ্ছেদ্য অংশ?
মা, এই স্বাধিকার, স্বাধীনতা অর্জন করতে বুঝি হারিয়ে ছিলে নিজের সম্মান?
এ কেমন স্বাধীনতা, মা?
যা অর্জনে মা বোন দিয়েছে আর সম্মান, আজ স্বাধীন হয়ে হারাচ্ছে মা বোন তাদের সম্মান?
মা, হাজারো মৃত্যুর ভিড়ে কেন আমার মৃত্যু হয় না?
মা, তোমার ভ্রূণ হত্যার মৃত্যুটাই বুঝি সম্মানের ছিলো!
তাই না?
মা, মহামারীর মৃত্যুও যে আমার কাছে অমৃত মনে হতো!
গাড়িরচাকার তলে পিষে যাওয়াটাও যেন চরমপন্থা ছিলো হারিয়ে যাওয়ার!
পানিতে তলিয়ে প্রকৃতির কৃষ্ণ গহ্বরে হারিয়ে যাওয়াটাও হয়তো এতো বেদনাদায়ক হতো না!
মা, এ কেমন মৃত্যু?
যে আমার সম্মান হানী করে, তার হাতের মৃত্যু আমার!
এতেও বিচার নেই তার!
এ কেমন মৃত্যু আমার!!!