সময়ের বিবর্তনের প্রেমকাব্য


 সময়ের বিবর্তনের প্রেমকাব্য

তানভীর আহমেদ



এখন আমি অনেকখানি অবাক হয়ে যাই

যে মানুষটা এত ভালবাসে

সবটা'র খেয়াল রাখে, ছোট-বড়ো প্রতিদিন,

সময়ের স্রোতে সেই মানুষটাই কতো বদলে যায়

দিনের শূন্যতায়, রাতের গভীরতার আড়ালে, নির্জনতায়,

সভ্যতার সুতোগুলো সরিয়ে

আলো আঁধারি গায়ে মেখে

আমার দখল নেয় সে।


সারাদিন ধরে প্রেমিক পুরুষটির জন্য

মান-অভিমান, ছোটো-বড়ো ভালোলাগা, দরকারি-অদরকারি

কথামালা জমিয়ে রাখি সযত্নে,

কিন্তু সে সব বলতে পারি কই!


আমার যে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে

সে নাকি রোজ নতুন করে বেঁচে ওঠে সকালে

সেই ঠোঁটগুলোকে বন্ধ করে দেয় জোর করে।

এমন একটা ভাব যেন অনেক খারাপ কিছু করেছি

অনেক শাস্তি দরকার আমার,

যেনো এই শাস্তিপ্রদান চলবে অনন্তকাল, ব্রহ্মাণ্ডের ধ্বংসাবধি।


রাতগুলো যেন নিকশ কালো,

ওর চোখগুলোও যেনো কোনো জঙ্গলের মাঝে গভীর কুয়ো

পৃথিবীর বুক চিরে অনেক ভেতর পর্যন্ত তার বিস্তার, ফাঁপা,

সেই চোখগুলো আমার তুলোর মতো শরীরটাকে

গিলে নিতে চায় নিজের মধ্যে।


কোমরবন্ধের আঘাত হানে আমার পিঠের বিস্তৃত উদ্যানে

প্রিয় মানুষটির ঐ পৌরুষময় চামড়ার বেল্ট,

রোজ আমার নরম চামড়ার আরও গভীরে

সদা বিস্ফোরণ ঘটে চলা জ্যোতিষ্কগুলোতে আঘাত হানে

তাদের আরোও অশান্ত করে।

চোখে জল আসে,

আলো আঁধারিতে ওই জলের ফোটাগুলোকে

মেঘের ধূম্রজাল বলে মনে হয়।


পিঠের দাগগুলোকে নিয়ে

ও এক-একটা নীহারিকা তৈরি করে,

আচ্ছা, এটা কী শুধুই শাস্তিদান! শুধুই সম্ভোগ?

ব্যাথাতেই হারিয়ে যাবে আখিঁর মেঘগুলো, নীহারিকাগুলো?


ওর উপর বিশ্বাস আছে আমার

হয়তো আমিই তার অসীম মহাশূন্যের মতো

শরীরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বৃথা ভয় পাই!

সে নিশ্চই একদিন মহাকাব্য লিখবে

রোজ রাতের গল্পগুলোকে জমিয়ে,

তবে হয়তো সেদিন এতটুকুনও অবাক হবো না

অথবা অবাক হওয়ার জন্য অস্তিত্বই থাকবে না।।


 

Blogger দ্বারা পরিচালিত.