উৎসব

 উৎসব 


পদ্মপাতার স্বরূপ যখন ভিজিবে পানপাত্রে

        লুকিয়ে দেখিবে ঘনকুয়াশায় বসন্তের কোকিল 

তার সেই মুগ্ধ ডাকে মন কি দিবে গো সাড়া

জ্যোৎস্না ভেজা রাত্রিতে যখন দেখিবে নিজের অপূর্ণ ক্ষত

 যখন পাইবে না কাউকে সাথে জখম পূরণ করিবার

     বসন্তের দক্ষিণ পবন কি দিবে দোলা তোমার মনের এপার ওপার


উৎসবে কি শাড়ি পরিধান করিয়া নৃত্য ,উৎযাপনের একমাত্র ভৃত্য

জলপাই,তেতুলের শীতল ছায়ায় পুষ্পার্ঘ্য যখন হয় চক্ষু দিয়া


      তেঁতুল চুরির মনোহর দৃশ্য উঁকি মেরে দেয় দৌড় মনের গহীন বন দিয়া

        কখন কি ভাবিয়া দেখিয়াছ শীতের উষ্ণ রৌদ্রে অসুস্থ বৃদ্ধের সহিত কথোপকথনের মানসিক প্রশান্তি,তৃপ্তি


     অনাথ,বন্ধার মনের ব্যাকুলতা বঝিয়া সৃজন ব্যাথা প্রগাঢ় রূপে অনুভব করিয়া সাহায্যের হাতের সংস্পর্শে অক্ষির বিতৃপ্ত তৃষ্ণার মধ্যে ও যে লুক্কায়িত রয়েছে গর্হিত উৎসব উৎযাপন


অসুস্থ পীড়িত পিতার দুদন্ড হাসি যেন সে উৎসবের ই মিছিল

    যন্ত্রণায় অধীর হইয়া জলবিহীন মৎস্য করুণা করিয়া ভিক্ষা যেমনি করিয়া ছটফট করে ,

               প্রাণটিকে ধরিয়া রাখিবার জন্যে


তেমনি যেন পিতার তীব্র পীড়ার ব্যাকুলতা র ছটফটানি অগ্নুৎপাত করিয়া সকলি পাজরের ছিদ্র গুলো ভস্ম করিয়া দাবানলের ন্যায় রক্তবাহিকা আনিতেছে বাহির করিয়া


বিষাক্ত পানপাত্রে পদ্ম যেমন দেখিতে অতি সুন্দর

 তাহা লইতে বিষে যে যাবে চলিয়া প্রাণ তাহা ভুলিয়া যায় মানব


তেমনি সকল উৎসব উৎযাপনের পাল্লা কি তবে সাজসজ্জায় বেষ্টিত , সংকল্পের টানা পোড়নে সকলি চিন্তার বাধা কাটল মোর জীবনের এই অভিনব ক্ষনে


হৃদয় হইল পরিষ্কার ,হেন হতে বাজিল একটি সুর,বলিল,

ওরে বোকা উৎসব হইল হদয়ের অটল আবিষ্কার

উৎসব হলো ছন্দের আনন্দে হইয়া বিমোহিত

যেন মনে হয় 


প্রদীপ্ত সূর্যের তেজের প্রখর আলোয় জ্বলজ্বল করা সমুদ্রের শান্ত নিবিড় কাচের ন্যায় স্বচ্ছ পানি

তাহাকে ক্যামেরার ফ্রেমে বাধিবার চেষ্টা না করিয়া 

      দ্যাও না একটিবার ছাড়িয়া মুক্ত হস্তে উড়ন্ত নীলিমায় আরেকবার

প্রকৃতির সিন্ধতায় দাও না তাকে খেলিবার সুযোগ উথাল পাতাল

   দাও না আরেক টি সুযোগ বিচ্ছেদ পূরণ করিবার

প্রকৃতির সাথে প্রকৃতির প্রেমের আবদ্ধ হইবার


তুমি আমি ক্ষণিকের অতিথি ,লইতে হইবে বিদায় চিরসুন্দর এ ধরণী হইতে 

স্মৃতি পড়িয়া থাকিবে করিয়া প্রকৃতির সাথে মাখামাখি লইবে যে তার প্রকৃত স্থান


সেদিন কোথায় যাইবে তোমার এ সাজসজ্জা,চাকচিক্যের বেশভূষার অবর্ণনীয় ইতিহাস 

কেন নৃত্য,কল্য,চাকচিক্যের ফ্রেমে বন্দী করিয়া বাধিয়া রাখিতে চাইছ উৎসবকে 


শীতকালের কাঁচাখেজুর রস সেবন কি উৎসব নয়?

শীতার্থ মানবের মাঝে কম্বল বিতরণ কি উৎসব নয়?

ক্ষুধার্ত ভিক্ষুকের জ্বালা নিভানো কি উৎসব নয়?

    তবে কি উৎসব কেবল বাহ্যিকতার নামমাত্র দৃশ্যমানের সুটকেস 

টাকায় কেনা বিলাসিতার পুকুর 

     যা কেবলমাত্র ধনীর সম্পদ দরিদ্রের তা কিছু নয়


অসুস্থ রোগীর সুস্থ হাসি,গল্পের সংস্পর্শে মানসিক চাপের নিরাময় তবে কি উৎসব নয়

উৎসবে কি তবে দরকার নেই মানসিক প্রশান্তি ,জোর করে কি তা হয়


তবে উৎসব কি বিভেদে সৃষ্টি হয়?


জয়া আচার্য্য

বিবিএ প্রথম বর্ষ

ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

Blogger দ্বারা পরিচালিত.