কোকিলা-কাঠঠোকরাণী
**-----এনতাজ কারিগর **
চেতিস ক্যানে চেতিস ক্যানে?ক্ষেপিসনেরে পোড়ামুখি
পোকার খুটা দিচ্ছিস দে,কিন্তু জানিস?
ভাল লাগে কারেও যখন সুখে থাকতে দেখি!
কী বলছিস বুচ্ছিনে তার কিছু।
না;ঐ মধুমাসে দেখনু তোরা ফিরিস এ ওর পিছু
নদীর ধারে ধারে মেটো পথের পাশে পাশে মাঠের কাছে
আম কাঁঠাল জাম শিমুল পলাশ বট পাকুড় আর নাটা গাছে
কুউ কুউ করে নেচেগেয়ে তাড়িয়ে ছুটিস উড়ে উড়ে
এডাল ওডাল এগাছ ওগাছ সারাটি বন জুড়ে
লুকিয়ে পড়িস চুপটি মেরে দোঁহে হিজল শাখে
গভীর ঘন শ্যামল পাতার নীড়ে শুকনো নদীর বাঁকে।
হেঃহেঃহেঃ!কাঠের পোকা খেয়ে ঠুকে ঠুকে
গোবর বোঝাই মগজে তোর ঢুকছে গোবর পোকে
ঘরটা তুই দেখছিলি বল কবে
ছানি পড়া কোন চোখে?
আমাদের কি ঘর বানাবার জো আছিল কভু
ও ক্ষ্যামতা কি দেছেন মোদের কোন কালেও প্রভু!
শোন কথা পাগলীটা কী কয়!
বলি ঘর হতে কি বেড়া-চাটি-ঢাকনা-চালা সব থাকতেই হয়?
প্রাণের ঘরে জ্বললে বাতি
আঁধার ঘেরায় আকাশ ছায়ে সুখের আসন পাতি
পাঁথার মাঝেও মুক্ত চরাচরে প্রাণের বাসর সাজে
গানের বাঁশি সুরে সদাই গুনগুনিয়ে বাজে।
থাকরে ওসব কথা!
দুয়ার এঁটেও কতজনে যায়না ঘরে বাঁধা
আর আমার তো ঘরই নাই বাঁধব তারে কোথা!
তবে কিসে উড়াল দিছে অন্য বনে
অন্য কারো সনে?
জানিনে ঠিক---হয়তবা;আবার নাও হতে পারে!
ভাবিনে আর তারে।
হ্যাঁরে কোকিলা!
এমনি করে একা একা কাটবে কি তোর বেলা?
না আবার কারো------
মর মর!বেশরমের কথার ছিরি শুনলে বমি উঠে
নির্লজ্জের শেষ সীমাটাও ছাড়াস দীঘল ঠোঁটে!
তবে তোর কোকিলরে কি তাড়িয়েছিস নিজে?
এখন একলা ফিরিস কারে খুঁজে খুঁজে?
অতো মধুর গানে গানে ফিরত তোরে ঘিরে
সে আজ রইল কোথায় তোরে ছেড়ে?
ওতুই বুঝবিনেরে কাঠঠোকরাণী
এই বুকের কোণে বাজে কত চিতা পোড়ার ধ্বনি!
মধু মাখা ঠোঁটের বীণায় স্বোয়াদ ঢালা গানে গানে
ঠুকরে পিঠের পালক তুলে ক্ষণেক হরষ বরিষণে
টেনে এনে বসিয়ে দিয়ে বায়সনীড়ের মাঝে
হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেল পাইনেকো আর খুঁজে!
বুঝেছিরে!ভাত দেয়ার ভাতার সে নয়
শুধু কিল ঠুকারই আস্ত গোঁসাই।
ধড়পড়িয়ে হয়তো এসে আর বছরের মধুমাসে
গানের পাকে ভুলিয়ে বেঁধে রাখবে ক্ষণেক পাশে!
শোন কোকিলা এবার এলে দিবি মুখে ঝামা ঘঁষে আগে
বুঝিয়ে দিবি হাড়েহাড়ে
সারা বছর একলা থাকার মজা কেমন লাগে!
হায় আমার পোড়া কপাল!
অমন করার ক্ষ্যামতা কি আর আমার পাশে আছে!
ঐটুকুনই লাভ যেটুকু ক্ষণ থাকে আমার কাছে।